৩১.৭.০৮

কাকলির ১ম সিডি ‘ভয় হতে তব অভয় মাঝে’ প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত




কাকলির ১ম সিডি ‘ভয় হতে তব অভয় মাঝে’ প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত


শিল্পী শিল্পীই, তা তিনি প্রবাসেই থাকুন আর দেশেই থাকুন। সুরের সাধনার কোন দেশভাগ নেই। গত ৭ জুন সেকথাই আবারো প্রমাণ হল শিল্পী নাহিদ কবীর কাকলির প্রথম সিডি ‘ভয় হতে তব অভয় মাঝে’-এর প্রকাশনা উৎসবে। টরন্টোর আলবার্ট ক্যাম্পবেল লাইব্রেরীর অডিটরিয়ামে তিনি তাঁর প্রথম সিডির প্রকাশনা উৎসবে গাইলেন একে একে রবীঠাকুরের ১৮টি গান। নিঃসন্দেহে রবীন্দ্রভক্তরা আপ্লুত হয়েছেন, আনন্দিত হয়েছেন। শিল্পী নিজেও কম আপ্লুত নন, তবুও তাঁর হৃদয়ে বেদনার মত বাজে শিক্ষাগুরু ওয়াহিদুল হকের কথা। বরেণ্য এই প্রয়াত শিল্পীর অনুপ্রেরণাতে ও সহযোগিতায় আরও আগেই, ২০০৫ সালে সিডিটি প্রকাশ করার কথা ছিল। ওয়াহিদুল হক তাঁকে বার বার বলতেন, ‘সবকিছু ছাড়লেও গান ছাড়িস না কিন্তু- যা দেশেই থাকিস আর প্রবাসেই থাকিস।’ সেকথা কাকলি ভোলেননি। শিল্পীর বক্তব্য অনুযায়ী, ‘এই সিডি আমার নিজের সৃষ্টি। যে কোন সৃজনশীল মানুষের মতোই, যে কোন শিশুর জন্মের মতোই আমি আনন্দিত। শুধু একটাই কষ্ট আমার এই প্রবল আনন্দের দিনে ওয়াহিদুল হক আর বেঁচে নেই।’
জুনের প্রকাশনা উৎসবের উদ্যোক্তা ও আয়োজক ছিলেন কবি দেলোয়ার এলাহী। টরন্টোতে এই প্রথম কোন বাংলাদেশী শিল্পীর একক রবীন্দ্রসঙ্গীতানুষ্ঠানের সেদিনকার আয়োজনে সুধীজনদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উদীচীর সভাপতি আজিজুল মালিক, সঙ্গীতশিল্পী জিবিনা সঞ্চিতা হক, নুরুল আলম লাল, দীনু বিল্লাহ, বাংলা জার্নালের সম্পাদক ইকবাল হাসনু, কবি ফেরদৌস নাহার, সংস্কৃতিকর্মী মঞ্জুলী কাজী, শিল্পী সৈয়দ ইকবাল, সঙ্গীতবোদ্ধা হাসান মাহমুদ প্রমুখ।
আবৃত্তিকার অনন্ত আহমেদের উপস্থাপনায় শতাধিক রবীন্দ্রভক্তের এই মিলনমেলায় কাকলি গেয়ে চলেন প্রধানত পূজা ও প্রকৃতিকেন্দ্রিক রবীন্দ্রসঙ্গীত- ভয় হতে তব অভয় মাঝে, দাঁড়াও আমার আঁখির আগে, বসন্তে কি শুধু, পথে চলে যেতে যেতে, কোথা হতে বাজে প্রেম বেদনা রে, কোন পুরাতন প্রাণের টানে এবং এগুলোর ধারাবাহিকতায় ১৮তম গান ছিল স্বদেশের প্রতি ফিরে যাবার প্রত্যয় ব্যক্ত করে, ‘ফিরে চল মাটির টানে’। কাকলির গান ছাড়াও সিডি প্রকাশনা উৎসবে কাকলির ‘আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রাণে’ রেকর্ডের সঙ্গে নাচ করেছে শিশুশিল্পী মাহিয়া হাবিব রিংকেল। পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথ থেকে আবৃত্তি করেন রোজিনা করিম ও জ্যোৎøা খানম, গান গেয়েছেন কাকলির ছাত্রী জারা চৌধুরী। প্রায় দেড় ঘন্টার এ অনুষ্ঠানটি সরাসরি অনলাইনে প্রচারিত হওয়ায় বিশ্বের নানা দেশ থেকে দেখেছে রবীন্দ্রনাথের ভক্তরা। অনুষ্ঠানে হারমোনিয়াম, তবলা এবং কী-বোর্ডে সাহায্য করেছেন যথাক্রমে হাসান মাহমুদ, তানজির আলম রাজীব এবং মাহবুব। মঞ্চসজ্জা করেছেন চারুকলার সাবেক ছাত্র শহীদ।
কাকলির সিডির ১২টি গানের মধ্যে ২টি আনুষ্ঠানিক, ১ টি স্বদেশ, ৩টি প্রকৃতি ও বাদবাকি ৬টি পূজা বিষয়ক। গানগুলো নির্বাচন করেছেন শিল্পী নিজে এবং পরিচালক নীলোৎপল সাধ্য। সিডির মিউজিক করেছেন কলকাতার শুভায়ু সেন মজুমদার এবং মিউজিক সম্পাদনা করা হয়েছে কলকাতাতেই। আর পরিবেশক ছিল ঢাকার আজিজ সুপার মার্কেটের ‘সুরের মেলা’।
শুধু ওয়াহিদুল হকই নন, শিল্পী মিতা হকও কাকলির গুরু। তারও আগে যখন এক্কেবারে ছোট্টটি ছিলেন তিনি প্রথম হাতে-খড়ি নিয়েছেন বাবা গীটারশিল্পী এনামুল কবীরের কাছে। বাবার পরে গান শিখেছেন অনুপ ভট্টাচার্য, কাদেরী কিবরিয়া প্রমুখের কাছে।

কোন মন্তব্য নেই:

morou kobita